পুরোটাই একটা কবিতা

4 06 2011

অনেক অনেক দিন পরে পুরোনো ডায়রীটা খুলে
খসে যাওয়া পাতার লালচে হয়ে যাওয়া লেখার ভিরে যে অতীত অনুভুতির দিনগুলো
লুকিয়ে আছে- ওটাই বোধহয় কবিতা।

দূর শহরে একলা বসতে পড়াশুনার ফাঁকে মায়ের একটা কি দু’টা চিঠি
বাবা সোনা মানিক সম্বোধনে- বুকের মাঝে রেখে দেয়ার স্মৃতিগুলো
খুব একলা লাগা ফাঁকা হৃদয়ের বারান্দায় ঐ অনুভুতিটাই হয়তো কবিতা।

বাবার শরীরের আপন গন্ধ থেকে বহুকাল বঞ্চিত থাকা সময়ে
পুরোনো চিঠিগুলোতে প্রতিদিন কাপর কাচা, গোসল করা, রাতে শোয়ার আগে শিশ দেয়া
পড়াশুনা করার উপদেশ, আর কত টাকা পাঠানো হলো
এইসব দেখে আচানক সেই সময়টাতে ফিরে যাওয়াই মনেহয় কবিতা।

ছোট্ট বোনের পেন্সিলে এলোপাথারী জ্যমেতিক আনকোরা ভাঙ্গা বাংলায় লেখা
ভাইয়া তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করে- তুমি কবে আসবা?
সে আজ রমনী হতে চলেছে- কি অদ্ভুত? এই তো কবিতা।

ছোট ভাইয়ের কোনো চিঠি নেই। ও লিখেনি- সেই শুন্যতাও তো একটা অনুভুতি
সেই অনুভুতি কি কবিতা নয়? ওটাও বুঝি কবিতাই।

কারো উপহার দেয়া হাতে বানানো ঈদকার্ড, খুব একটা সুন্দর নয়
তবুও ওটায় হাতের যতন, তাকালেই রঙ্গীন অতীত
সেই রংগুলো? কবিতা হবেনা?

আরো কিছু ছবি, টুকরো কাগজ, জীবনের প্রথম লেখাটার কাঁটা ছেঁড়া পান্ডুলিপি
পুরোনো ভাঁজের চাঁপে বিচ্ছিন্ন চার টুকরো হয়ে যাওয়া কোনো প্রিয় মানুষের চিঠি
আরো কিছু…

এইসব মিলিয়ে প্লাষ্টিকের ট্রান্সপারেন্ট ব্যাগ।
পুরোটাই একটা কবিতা।